লেবাননে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৪৯২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৪ শিশু, ৩৯ নারী এবং দুই মেডিক সদস্য রয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৬৪৫ জনেরও বেশি মানুষ। দেশটির তিনশোর বেশি স্থাপনায় সোমবার একযোগে হামলা করেছে ইসরাইল। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আলজাজিরার।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, সোমবার লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রায় ১৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে সাড়ে ছয়শোটিরও বেশি হামলা চালিয়েছে তেলআবিব। প্রাণ ভয়ে লেবানন ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
এই হামলার পাল্টা জবাব দেয়া শুরু করেছে লেবাননের সশ্বস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল¬াহ। উত্তর ইসরাইলে দুই শতাধিক রকেট নিক্ষেপ করেছে তারা। এতে অঞ্চলটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি হিজবুল¬াহর।
নিজেদের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এছাড়াও দীর্ঘ সময় ধরে হিজবুল্লাহ লেবাননের জনগণকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে জানান তিনি।
যদিও, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর হুমকিকে পাত্তা দিচ্ছে না হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এক শীর্ষ নেতা পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছে তাদের যোদ্ধারা।
দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যেকোনো সময় আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই সংঘাত চলতে থাকলে লেবানন অন্য গাজাতে পরিণত হবে, যা এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন। ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং উদ্বেগজনক। আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের মধ্যে আছি।
মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক শক্তি এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে। আর তুরস্ক বলেছে যে ইসরাইলের হামলা পুরো অঞ্চলকে বিশৃঙ্খলার দিকে টেনে আনতে পারে।
আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে সংঘাত যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে আরও জানানো হয়েছে যে, আমেরিকা তার মিত্র ও অংশীদারদের রক্ষা করতে প্রস্তুত। মধ্যপ্রাচ্যে সেনা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।